মুক্তিকন্ঠ

ভয়েস অফ ফ্রিডম ফাইটার ১৯৭১

চন্দ্রগঞ্জের চরশাহীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগ

অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম মামুন

শেয়ার করুন

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন চরশাহী ইউনিয়নের দক্ষিণ-পূর্ব চরশাহী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের উপর স্থানীয় বখাটে কর্তৃক লঞ্ছিতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহত প্রধান শিক্ষক রিপন চন্দ্র মজুমদার

জানাযায়, সোমবার (২৩ মার্চ) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিপন চন্দ্র মজুমদার প্রাতিষ্ঠানিক কাজে এবং ছাত্র/ছাত্রীদের বিনামূল্যে বিতরণকৃত বিস্কুট গ্রহণ করার জন্য বিদ্যালয়ে যায়। সকাল আনুমানিক ১০ ঘটিকার সময় তিনি স্কুল আঙ্গিনায় এক অভিভাবকের ফোনে উপবৃত্তির টাকা কেন আসে নাই তা মোবাইলে দেখতেছে। এই সময় হঠাৎ করে অতর্কিতভাবে স্থানীয় বখাটে সিরাজুল ইসলাম মামুন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিপন চন্দ্র মজুমদারকে কিল ঘুষি মারা আরম্ভ করে। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই অভিযুক্ত মামুন প্রধান শিক্ষককে মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেয়। বিষয়টি বিদ্যালয়ের অভিভাবক এবং ছাত্র/ছাত্রীদের সামনেই ঘটে গেল। এই নিয়ে স্থানীয়া গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অভিযুক্ত মামুন অবস্থা বুঝতে পেরে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। 

ঘটনা জানার সাথে সাথে চন্দ্রগঞ্জ থানার এসআই সাইফুল ইসলাম ঘটনার স্থলে পৌঁছায় এবং ঘটনার সত্যতা পায়। পরে আহত প্রধান শিক্ষককে তার সহকারীরা উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মামুনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

অভিযুক্ত মামুন এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের দালাল এবং খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক হিসেবে পরিচিত। মামুন পূর্ব চরশাহী গ্রামের মাহবুব উদ্দিন ভূইয়া বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালামের নাতী ও ছাব্বির আহম্মদের ছেলে । স্থানীয় ভাবে জানা যায় , মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫ শতাংশ জমি নিজের নামের রেকর্ড করে নেয়। অনেকের ধারনা জমি জমাকে কেন্দ্র করেও মামুন প্রধান শিক্ষক রিপনের উপর চড়াও হতে পারে। কারন  স্কুলের স্বার্থ এবং সরকারী স্বার্থ প্রতিষ্ঠানের প্রধানকেই দেখতেই হয়। অনেকেই  বলে মামুন এত বেপরোয়া হওয়ার অন্যতম একটি কারন তার দাদা মুক্তিযোদ্ধা, কেউ তার কিছু করতে পারবে না। মামুন মাদকের সাথে জড়িত এবং নিয়মিত মাদকসেবী বলে জানায় এলাকার অনেকে। এলাকাবাসী এই ধরনের ঘৃণ্য কাজের সুষ্ঠূ বিচার কামনা করেন।

এদিকে ঘটনা শুনার পর থেকেই থানা এলাকার অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকায় মিলিত হন। প্রতাপগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক কাজী মোঃ মোস্তাফা কাজল জানান, এই নেক্কারজনক ঘটনার যদি সুষ্ঠু বিচার না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে জাতি গড়ার কারিগরদের কোন মূল্যায়ন থাকবে না।

আহত প্রধান শিক্ষক রিপন চন্দ্র মজুমদার হাজিরপাড়া ইউনিয়নের হরিহর চক্র গ্রামের বিষ্ণু মাষ্টারের বাড়ির বিষ্ণু মাষ্টারের ছেলে। উল্লেখ্য রিপন চন্দ্র মজুমদারের বাবা এবং মা দুই জনই বর্তমানে অন্যত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছে।

এ বিষয়ে চরশাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলজার মোহাম্মদকে জানানো হলে তিনি কোন পদক্ষেপ না নিয়ে থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন। আহত প্রধান শিক্ষককে দেখতে আসেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ ফরিদ আহম্মদ।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক জানান,  বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি এবং একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত সময়ে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।তিনি আরো বলেন শিক্ষক লাঞ্ছিতের ব্যাপারে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।


শেয়ার করুন