মুক্তিকন্ঠ ডেস্ক:
লক্ষ্মীপুরে আলোচিত সাবেক যুবলীগ নেতা নোমান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে আওয়ালীগ নেতা জিহাদীকে প্রধান আসামী করে মোট ৩৩জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২.৩০ মি. সময় চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত যুবলীগ নেতা নোমানের বড় ভাই বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহফুজুর রহমান। হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ২জন সবুজ ও ছোট বাবলু এবং সন্দেহভাজন হিসেবে ইসমাইল নামে একজনসহ মোট ৩জনকে গ্রেপ্তার করেছে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তহিদুল ইসলাম। এছাড়াও স্থানীয়ভাবে জানাযায়, র্যাব-১১ কর্তৃক রুবেল নামের এজাহার নামীয় আরেক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামী আবুল কাশেম জিহাদী চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এবং বশিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও নিজের নামে জিহাদী বাহিনী করে প্রায় ২যুগ ধরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার নামে।
পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানাযায়, গত মঙ্গলবার (২৫এপ্রিল) রাত ০৯.৩০মি. সময় এজাহার নামীয় সবুজ ও তারেক আজিজ পূবপরিকল্পনা মতে নিহতদের পোদ্দার বাজার থেকে নাগেরহাট বাজারগামী পথে স’মিলের সামনে সবুজের অফিসে ডেকে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পৌছামাত্র এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামীরা নোমান ও রাকিবের উপর এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। গুলি বর্ষণশেষে দুর্বৃত্তরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন নোমান ও রাকিবের গুলিবিদ্ধ দেহ লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। নোমান ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং রাকিবকে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পরে ঢাকা নেওয়ার পথে সেও মারা যায়।
গত কাল বুধবার (২৬এপ্রিল) ময়নাতদন্ত শেষে বিকাল ৫টায় স্থানীয় ডিএসইউ কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন খোলা মাঠে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে নিহতদের জানাযা সম্পন্ন হয়। পরে তাদেরকে স্ব স্ব পারিবারিক করবস্থানে দাফন করা হয়। জানাযায় জেলা আওয়ামীলীগ ও অংগসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নিহত আব্দুল্ল্যাহ আল নোমান বশিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই, লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক এবং প্রস্তাবিত লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক। অন্যদিকে রাকিব ইমাম লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা।
এ বিষয়ে নিহত নোমানের বড় ভাই ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহফুজুর রহমান জানান, ‘ঐ আবুল কাশেম জিহাদী এবং তার অনুসারীরা আমার ভাই ও রাকিবকে খুন করেছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই। তাদের যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়, কোন প্রকার রাজনৈতিক প্ররোচনায় তারা যেন আশ্রয় না পায়, আমার ভাই আওয়ামীলীগের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিল’।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তহিদুল ইসলাম জনান, ‘যুবলীগ নেতা নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হত্যার ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে, ৩জন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকী আসামীদের ধরতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম কাজ করছে’।
আরও পড়ুন
চন্দ্রগঞ্জ ইউপি কার্যালয়ে লাগানো তালা গভীর রাতে উধাও
চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কার্যালয়ে তালা ও ভাংচুর, সেবাপ্রার্থীদের চরম ভোগান্তি
লক্ষ্মীপুরে সিএনজি-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ: নিহত ২ ,আহত ৯