মুক্তিকন্ঠ

ভয়েস অফ ফ্রিডম ফাইটার ১৯৭১

চন্দ্রগঞ্জের অপরাজনীতির বলি সাদ্দাম ও কাউছার

আনোয়ার হোসেন সাদ্দাম ও কাউছার মানিক বাদল

শেয়ার করুন

মোহাম্মদ ফয়সাল, যুক্তরাষ্ট

চন্দ্রগঞ্জের অপরাজনীতির বলি হলেন জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) যুবদলের আনোয়ার হোসেন সাদ্দাম ও ছাত্রদলের কাউছার মানিক বাদল নামের  সাহসী দুই কর্মী। এই এলাকায় নানা রকম প্রচার/অপপ্রচার চলছে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের বিএনপি’র রাজনীতির জন্য  বার বার কারাভোগী যুবদল নেতা সাদ্দাম ও কাউছারকে দলীয় নোংরা রাজনীতির বলি করে কোন প্রকার আত্নপক্ষ সুযোগ না দিয়ে  দলীয় পদ থেকে বহিস্কার করা হয়। এ নিয়ে চন্দ্রগঞ্জ বিএনপি’র একাংশ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। গত ৭  আগষ্ট জেলার দায়িত্ব প্রাপ্তদের আদেশে স্বাক্ষরসহ দুটি পৃথক পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিস্কারাদেশ প্রকাশ করা হয়।

আনোয়ার হোসেন সাদ্দাম পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের ইয়াছিন পাটোয়ারী বাড়ির বাচ্চু মিয়ার ছেলে এবং কাউছার মানিক বাদল একই গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা বশির আহম্মেদ ছোট ছেলে।

গত (৫ আগষ্ট) ২০২৪ সারা দেশে আ’লীগ সরকারের পতনের পর দেশ ব্যাপী বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত নেতা কর্মীরা আনন্দ মিছিল করে। তারই অংশ হিসেবে চন্দ্রগঞ্জ ও এর আশে পাশের এলাকাতেও এই আনন্দ মিছিল করা হয়। মিছিল এবং পরবর্তী সময়ে কিছু সুযোগ সন্ধানী, অতিউৎসাহী লোকেরা অনেকের বাড়ি ঘর ভাংচুর, দোকান লুট, বাড়ি লুট, অগ্নি সংযোগ করার মত হীন কাজে জড়িয়ে পড়ে। জানাযায়, এই ঘটনার পর পরই জেলা বিএনপি থেকে চন্দ্রগঞ্জের নেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। তখন চন্দ্রগঞ্জের বড় বড় রাঘব বোয়ালরা নিজেদের অপকর্ম ডাকতে জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে সাদ্দাম ও কাউছারের নাম পাঠায়। যার ফলশ্রুতিতে তাদের  তদন্ত ছাড়াই এবং তাদেরকে কোন প্রকার আত্নপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে দল থেকে বিহস্কার করা হয়।

স্থানীয়ভাবে জানাযায়, বিগত আ’লীগ সরকারের আমলে চন্দ্রগঞ্জ আ’লীগের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা ও অন্তরায় ছিল বিএনপির সাদ্দাম ও কাউছার। যেখানে বিএনপির অনেক বড় বড় নেতাকেই দেখা গেছে আ’লীগের সাথে আতাত করে সময় পার করতে। অন্যদিকে একমাত্র সাদ্দাম ও কাউছার কোন প্রকার আতাত ছাড়াই এককভাবে আ’লীগের দুঃশাসনের মোকাবেলা করে গেছে। যার কারনে আ’লীগের করা ডজন ডজন মিথ্যা মামলা ও অনেক মামলার সাজা মাথায় নিয়ে ফেরারী জীবন যাপন করতে হয়েছে তাদের।

পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, সাদ্দাম আ’লীগ সরকার বিরোধী আন্দোলনে ৭ আগষ্ট পর্যন্ত ঢাকাতেই ছিল, যা তার ফেসবুক আইডির বিভিন্ন পোষ্ট দেখলেই বুঝা যায়। অন্যদিকে কাউছার আনন্দ মিছিল শেষ করে  অসুস্থ হয়ে পড়ে, পরবর্তীতে সে চন্দ্রগঞ্জে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা গ্রহণ করে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে চন্দ্রগঞ্জ বিএনপি’র এক শীর্ষ স্থানীয় নেতা জানায় এখন অনেকের অপকর্ম ডাকার জন্য এই দুজনকে চক্রান্তের স্বীকার করা হয়েছে, সাদ্দাম তো বাড়িতেই ছিল না আর কাউছার তো ছিল অসুস্থ। এছাড়াও একাধিক ভুক্তভোগীর সাথে সরাসরি কথা বলে জানা গেছে তাদের সাথে সাদ্দাম বা কাউছার কোন প্রকার খারাপ আচরন বা লুটপাট করে নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন সাদ্দাম জানান, “আমি ঢাকাতে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিই, ৭আগষ্ট রাতে আমি চন্দ্রগঞ্জে আসি। এসে শুনি আমি দল থেকে বহিস্কার। বিষয়টি আমাকে খুবই মর্মাহত করে। কারন গত ১মাস যাবত ঢাকাতে দিন রাত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সময় দিতে গিয়ে আমার অন্তসত্বা স্ত্রীকেও সময় দিতে পারি নাই। পরবর্তীতে এলাকায় এসে বহিষ্কারের খবর শুনে তার কয়েকদিন পরেই আমি ঢাকা চলে যাই, কারন আমার স্ত্রী তখন হাসপাতালে ভর্তি ছিল।”

কাউছার মানিক বাদল জানায়, “আমি দীর্ঘদিন আ’লীগ দুঃশাসনের মামলা হামলার স্বীকার হয়ে এলাকাতেই ছিলাম না। ৫আগষ্ট আনন্দ মিছিল করার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি, যার কারনে আমি কয়েকদিন বাড়িতেই ডাক্তারের তত্বাবধানে চিকিৎসা গ্রহণ করি। আমি বাড়িতে অসুস্থ অবস্থাতেই আমার বহিষ্কারের বিষয়টি শুনতে পাই। আমি এই বহিষ্কারের বিষয়ে  লক্ষ্মীপুর জেলার সম্মানিত নেতৃবৃন্দকে তদন্ত করে  ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি।”


শেয়ার করুন

আরও পড়তে পারেন..