মুক্তিকন্ঠ

ভয়েস অফ ফ্রিডম ফাইটার ১৯৭১

লক্ষ্মীপুরে বন্যার পানি নামার সাথে বাড়ছে ডায়রিয়ার সংক্রমণ : হাসপাতালে শয্যা-ঔষুধের সংকট

সদর হাসপাতালের ডায়েরিয়া ওয়ার্ড

শেয়ার করুন

মোহাম্মদ হাছান, লক্ষ্মীপুর 

লক্ষ্মীপুরে ভয়াবহ বন্যার কবলে লক্ষ্মীপুরের ৫ উপজেলার বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত থাকায় পানিবন্দি বাসিন্দাদের মাঝে দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি ও চর্মরোগসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের সংক্রমণ। হাসপাতাল গুলোতে রোগীর চাপ ও শর্য্যা সংকটে মেঝেতে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন অনেক রোগী। আক্রান্তদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। এদিকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে কলেরা স্যালাইন, সিরাপ সালফুটামল, হিসটাসিন ও ডায়রিয়া এন্টিবায়োটিকসহ ঔষধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে বাহিরে থেকে স্যালাইনসহ ঔষধ কিনতে হচ্ছে এসব সরকারি হাসপাতালের রোগীদের। 

সরেজমিনে ১০০ শর্য্যার লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর চাপে তিল ধারণের জায়গা নেই। এক একটি বেডে গাদাগাদি করে তিন-চার জন করে রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেক রোগীই বেডে জায়গা না পাওয়ায় মেঝেতেই বিছানা পেতে সারিবদ্ধ ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ব্রাদার নোমান হোসেন বলেন, ১০ বেডের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বর্তমানে ভর্তি রোগীই আছে প্রায় ৯০ জন। এক দুজন নার্স দিয়ে এতো গুলো রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা খুবই কষ্ট কর। একজনের স্যালাইন লাগাতে গেলে-দশ জন ডাকে ঔষধ দিতে। তার উপরে স্যালাইন ও ডায়রিয়া এন্টিবায়োটিক ঔষধ সংকট। এখন রোগীর স্বজনরা বাহির থেকে কিনে আনলে তাদিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে নিচ্ছি। 

ডায়রিয়া বিভাগের ইনচার্জ লিলু রানী দাস বলেন, গত তিন দিনে ৩ শতাধিক ডায়রিয়া ও জ্বর নিয়ে রোগী ভর্তি হয়েছে। যেভাবে রোগী ভর্তি হচ্ছে তারা সবই বন্যাক্রান্ত এলাকার। গত তিন দিনে গণহারে ডায়রিয়া, জ্বর নিয়ে রোগী ভর্তি হচ্ছে। ১০ জনের বেড তো খালি নেই। মেঝেতেও হাটার জায়গা নেই। 

এদিকে জেলার ৫টি উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রে গুলোতে ডায়রিয়া, জ্বরসহ পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মেডিকেল টিমের কর্মীরা চিকিৎসা সেবা দিলেও তা অপর্যাপ্ত। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন আশ্রয় কেন্দ্রের বাসিন্দাসহ স্থানিয়রা।

লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আহাম্মদ কবীর বলেন, বন্যার কারণে ডায়রিয়াসহ চারদিকে পানিবাহিত রোগের বিস্তার লাভ করছে। স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে শুরু থেকে আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন এলাকায় ৬৪টি মেডিকেল টিমের সদস্যরা চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে হাসপাতালগুলোতে রোগী বাড়ায় কলেরার স্যালাইনসহ ওষধের সংকট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি উধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দু-তিন দিনের মধ্যে স্যালাইনসহ ঔষধ সরবরাহ করা হলে সংকট নিরসন হবে বলেও জানান তিনি।


শেয়ার করুন