মুক্তিকন্ঠ

ভয়েস অফ ফ্রিডম ফাইটার ১৯৭১

প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগের হুমকি: নেট দুনিয়ায় প্রতিবাদের ঝড়

প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম

শেয়ার করুন

মোহাম্মদ হাছান, লক্ষ্মীপুর

ঐহিত্যবাহী প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলামকে জোর করে পদত্যাগের হুমকি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছে একই বিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত ছাত্র মো. ইমরান হোসেন।

সোমবার (৬ অক্টোবর) ইমরান হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে আগামী ১২ অক্টোবর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলামকে জোর পূর্বক পদত্যাগের হুমকি দিয়ে একটি পোষ্ট করে।

এই পোষ্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে নেট দুনিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠে। প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান, প্রাক্তন ছাত্র/ছাত্রীরা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এই বিষয়ে প্রতিবাদ করে। 

জানাযায়, সোমবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় চন্দ্রগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের  ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের দাবীতে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে মিছিল ও সমাবেশ করে। এসময় প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী এই মিছিলে অংশগ্রহণ করে নি। যার কারনে ব্যক্তিগত ক্রোধ থেকে ইমরান ও এই স্কুল থেকে বহিস্কৃত কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে এই ধরনের একটি ঘৃণিত চক্রান্ত করে বলে স্থানীয়রা জানায়। 

প্রতাপগঞ্জ স্কুলের একজন শিক্ষক জানায়, আমাদের শিক্ষার্থীরা বরাবরই পড়ালেখায় ভালো, তাদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস হলেও সমস্যা নাই, না হলেও কোন সমস্যা নাই। তিনি আরো বলেন আমাদের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনার বাহিরে কোন ছাত্র/ছাত্রী বিদ্যালয়ের গেইট অতিক্রম করে না।

প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০৩ ব্যাচের ছাত্র যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, আগামী ১২ তারিখ প্রয়োজনে আমাদের প্রাণের বিদ্যাপীঠ ও আমাদের সম্মানিত প্রধান শিক্ষকের নিরাপত্তার জন্য সকল প্রাক্তণ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় গেইটে অবস্থান করবে।

এ বিষয়ে এলাকায় অবস্থানরত শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। অনেক অভিভাবক জানান, আমাদের সন্তানরা মূলত সিরাজ স্যারের কারনেই এখনো শৃঙ্খলিত। বর্তমান সময়ে ছাত্র/ছাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে, স্যারের সঠিক দিক নির্দেশনার কারনে এখনো প্রতাপগঞ্জের ছাত্র/ছাত্রীরা বিপথগামী হয় নি। দুই এক জনের কথা ভিন্ন, এই ভিন্নদেরকেও স্যার কোন ভাবে ছাড় দেয় না।

পরবর্তীতে রাতেই দেখা যায় ইমরান হোসেন তার ফেসবুক আইডিতে একটা পোষ্ট করে যে, এটা একান্ত ভুলে হয়ে গেছে, সে এব্যাপারে ক্ষমা প্রার্থী। এছাড়াও ইমরান প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষমা ছেয়ে একটি দরখাস্ত লিখে যা, পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে সে প্রধান শিক্ষকের কাছে ভুল বশত কৃত কর্মের জন্য ক্ষমা চায় এবং পরবর্তীতে আর কখনো এই ধরনের কাজের পুনরাবৃত্তি হবে না মর্মে জানায়।

প্রতাপগঞ্জ স্কুলের একটি বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য ইমরানকে গত বছর বিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয়।  ইমরানের সাথে বহিস্কৃত আরো কয়েকজন একসাথ হয়ে এধরনের পরিকল্পনা করে। 

এ বিষয়ে প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, গত কালকে অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চন্দ্রগঞ্জে ২০২৫সালের এসএসসি পরীক্ষায় সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার জন্য আন্দোলন করে। সেখানে প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও অংশগ্রহণ করার আহ্বান করা হয়। বিদ্যালয়ের নিয়ম বহির্ভূত কোন কাজে শিক্ষার্থীরা কখনো অংশগ্রহণ করে না। এজন্য গতকালকেও করে নি। পরে জানতে পারি কে বা কাহারা আমার পদত্যাগের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করেছে।


শেয়ার করুন

আরও পড়তে পারেন..