লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয় তালা মেরে ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিয়ন পরিষদে আসা সেবা প্রত্যাশীরা।
সোমবার (১৩জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। এতে সাধারন জনগন ও সেবা প্রত্যাশী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জানাযায়, প্রতিদিনের মত সকালে চেয়ারম্যান কার্যালয়ে আসলে কয়েক দুর্বৃত্ত এসে চেয়ারম্যানকে তার অফিস থেকে বের করে দেয় এবং তারা নিজেরা একটি তালা এনে চেয়াম্যানের অফিসে তালা মেরে দেয় এবং চেয়ারম্যানকে অফিসে আসতে নিষেধ করে। পরে চেয়ারম্যান অফিস থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়। এর আগে তারা বিভিন্ন সরকারী সেবা প্রদান সম্বলিত ব্যানার ভেংগে ফেলে।
স্থানীয় সেবা প্রত্যাশী আইনুল জানান, ‘চেয়ারম্যান একজন ভালো মানুষ, তিনি ভিন্ন দল করলেও কখনো কাউকে কোন কাজে হয়রানি করে নি। সাধারন মানুষের যাতে স্বাক্ষর পেতে সমস্যা না হয় সেজন্য সারাদিন অফিসে বসে থাকেন। তিনি না থাকায় আমাদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে’।
আরেক সেবা প্রত্যাশী তাহমিনা বলেন, আমরা আগে সব সময় চেয়ারম্যান সাহেবকে অফিসে পেতাম, এখন আজকে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে আমাদের খুবই অসুবিধা হচ্ছে’।
ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সকাল বেলা চেয়ারম্যান সাহেব আসার পর কয়েকজন লোক এসে চেয়ারম্যান সাহেবকে অফিস থেকে বের করে দেয়। পরিবর্তীতে তারা অফিসে একটি তালা মেরে দেয়। সরকারি অফিসে এইভাবে তালা মারার নজির আগে ছিল না, এর আগে কয়েকজন এসে সরকারী বিভিন্ন সেবা প্রদর্শনীর ব্যানার ভেঙ্গে ফেলে। সকাল থেকে বিভিন্ন মানুষ অফিসে চেয়ারম্যান সাহেবের স্বাক্ষরের জন্য এসে ফেরত যাচ্ছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব জাবেদ এবং যুগ্ন আহ্বায়ক মনির হোসেন টিপুসহ কয়েক এসে চেয়ারম্যানের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং তাকে অফিস থেকে বের করে দিয়ে অফিসের দরজার তালার উপর আরেকটি তালা লাগিয়ে দেয়। এতে সাধারন সেবাপ্রার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
অভিযুক্ত চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্চাসেবকদলের সদস্য সচিব জাবেদ হোসেন জানান, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না, আমি ইউনিয়ন পরিষদে যাইনি, আমি সকাল থেকে দেওয়ান শাহ দিঘীর পাড়ের মেলাতে আছি।’
উল্লেখ্য, গত ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হওয়ায় চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে তার বর্তমান পদবী এবং আ’লীগের সকল সদস্য পদ থেকে বহিস্কার করা হয়। এছাড়াও ইউপি নির্বাচনে নৌকাকে হারানোর কারনে বিগত সরকারের আমলে তাকে অনেক লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগী চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, ‘আমি সকালে অফিসে যাওয়ার পর কয়েকজন লোক আসে, আমি তাদেরকে চিনি না, তারা এসে আমাকে জোর করে অফিস থেকে বের করে দেয় এবং অফিসে আর আসতে বারণ করে। তিনি আরো বলেন, ‘আমি ইউপি নির্বাচনে নৌকাকে হারানোর জন্য বিগত সরকারের সময় আমাকে অনেকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।’
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কায়সার হামিদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখনো এ বিষয়ে কোন তথ্য পাই নি, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ কর হবে।’
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানা’র মুঠোফোনে একাধিক বার কল করেও তাকে পাওয়া যায় নি। পরে তার হোয়াটসএ্যাপ নাম্বারে ভয়েস ম্যাসেস দিয়ে বিষয়টি জানানো হলেও তিনি রিপ্লাই করেন নি।
আরও পড়ুন
চন্দ্রগঞ্জ ইউপি কার্যালয়ে লাগানো তালা গভীর রাতে উধাও
লক্ষ্মীপুরে সিএনজি-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ: নিহত ২ ,আহত ৯
লক্ষ্মীপুরে চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপি’র মতবিনিময় সভা-২০২৫