মুক্তিকন্ঠ

ভয়েস অফ ফ্রিডম ফাইটার ১৯৭১

লক্ষ্মীপুরে প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগের হুমকি: শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচী

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের একাংশ

শেয়ার করুন

মোহাম্মদ হাছান, লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার হুমকি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল গেইট সংলগ্ন ঢাকা-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে এই কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। এতে প্রায় ৩০ মি. যানবাহন চলাচল ব্যাহত ছিল।

বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচীতে প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ২ হাজার ছাত্র/ছাত্রী উপস্থিত ছিল। ছাত্র/ছাত্রীরা একটাই দাবী করে যে তাদের বিদ্যালয়, সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক নিয়ে কেউ ভবিষ্যতে কোন প্রকার হুমকি বা ক্ষতির চেষ্টা করলে তারা তা শক্ত হাতে প্রতিহত করবে। এসময় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. নিজাম উদ্দিন, সহকারী শিক্ষক মীর মো. মাজেদ, মো. হারুনুর রশিদ, মো. ইস্রাফিল হোসেন, মো. সাইফুল ইসলাম, মাইনুল ইসলাম সুজনসহ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক কর্মচারীরা উপস্থিত ছিল।

বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সাবেক অভিভাবক প্রতিনিধি মো. দেলোয়ার হোসেন, এনামুল হক রতন, অভিভাবক মো. মানিক, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. নিজাম উদ্দিন। বক্তারা কঠোর ভাবে হুশিয়ারী দেন, ভবিষ্যতে  এই ধরনের অনৈতিক কাজের সাহস  কেউ দেখালে তাদের কঠোর ভাবে দমন করা হবে। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকির সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রসাশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।

প্রসঙ্গত, সোমবার (৬ অক্টোবর) ইমরান হোসেন নামে ফেসবুক আইডি থেকে আগামী ১২ অক্টোবর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলামকে জোর পূর্বক পদত্যাগের হুমকি দিয়ে একটি পোষ্ট করে।

এই পোষ্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে নেট দুনিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠে। প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান, প্রাক্তন ছাত্র/ছাত্রীরা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এই বিষয়ে প্রতিবাদ করে। 

জানাযায়, সোমবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় চন্দ্রগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের  ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের দাবীতে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে মিছিল ও সমাবেশ করে। এসময় প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী এই মিছিলে অংশগ্রহণ করে নি। যার কারনে ব্যক্তিগত ক্রোধ থেকে ইমরান ও এই স্কুল থেকে বহিস্কৃত কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে এই ধরনের একটি ঘৃণিত চক্রান্ত করে বলে স্থানীয়রা জানায়।

পরবর্তীতে রাতেই দেখা যায় ইমরান হোসেন তার ফেসবুক আইডিতে একটা পোষ্ট করে যে, এটা একান্ত ভুলে হয়ে গেছে, সে এব্যাপারে ক্ষমা প্রার্থী। এছাড়াও ইমরান প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষমা ছেয়ে একটি দরখাস্ত লিখে যা, পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে সে প্রধান শিক্ষকের কাছে ভুল বশত কৃত কর্মের জন্য ক্ষমা চায় এবং পরবর্তীতে আর কখনো এই ধরনের কাজের পুনরাবৃত্তি হবে না মর্মে জানায়।

প্রতাপগঞ্জ স্কুলের একটি বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য ইমরানকে গত বছর বিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয়।  ইমরানের সাথে বহিস্কৃত আরো কয়েকজন একসাথ হয়ে এধরনের পরিকল্পনা করে। 

প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ফেসবুকে হুমকির বিষয়ে আমি বিব্রত, তবে ছাত্র/ছাত্রী ও শিক্ষকদের বিক্ষোভে অংশগ্রহণের বিষয়ে আমাকে জানালে আমি তাদের না করি। কিন্তু বিক্ষুব্ধ ছাত্র/ছাত্রীদের কোন ভাবে থামানো গেল না। পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল শিক্ষকদের সহায়তায় ছাত্র/ছাত্রীদের আবার শ্রেণী কক্ষে ফেরত নিয়ে আসা হয়।

 


শেয়ার করুন

আরও পড়তে পারেন..