মুক্তিকন্ঠ

ভয়েস অফ ফ্রিডম ফাইটার ১৯৭১

অতীতে সোনার বাংলা কায়েম করতে গিয়ে শশ্মান বাংলা কায়েম করেছে, লক্ষ্মীপুরে ডা. শফিকুর রহমান

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান

শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দূর্নীতি দুঃশাসন করে কেউ টিকে থাকতে পারেনা, অতীতে সোনার বাংলা কায়েম করেতে গিয়ে শোষন করা হয়েছে এমন রাজনীতি করা যাবেনা। যাতে ফ্যাসিবাদের মত দেশ ছেড়ে পালাতে হয়, দুঃশাষন থেকে জাতি মুক্তি চায়। জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ইসলামী কোন দলের লোক কোথাও চাঁদাবাজি,দখলবাজি ও জলুমবাজির সাথে কখনো যুক্ত হয়না। কারন তারা আল্লাহকে ভয় করে। ২৫ তারিখের মধ্যে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি না দিলে তিন কোটি জামায়াত নেতাকর্মীকে কারাগারে নিতে অন্তবর্তিকালীন সরকারকে প্রস্তুুতি নিতে আহবান জানান তিনি।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের আদর্শ সামাদ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জেলা জামায়াতের আমির রুহুল আমিন ভূইয়ার সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী ফারুক হোসাইন নুরনবী ও সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট মহসিন কবির মুরাদের সঞ্চালনা করেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, ৫৪ বছরে এ বাংলাদেশের অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। দফায় দফায় রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছে। এই ৫৪ বছরে অনেক জনের শাসন আমরা দেখেছি। অনেক আদর্শের কথা আপনারা শুনেছেন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ইসলামের আদর্শের শাসন এখনো দেখার সুযোগ হয়নি। অতীতে সোনার বাংলা কায়েম করতে গিয়ে, শশ্মান বাংলা কায়েম করেছে। কোরআনই একমাত্র সোনার বাংলা কায়েমের গ্যারান্টি দিতে পারে। আর কেউই দিতে পারবে না। বাংলার জমিনে তার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ। এখন হবে ইনশাআল্লাহ কোরআনের বাংলাদেশ।

ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, নতুন প্রজম্মের তরুনরা দেখিয়ে দিয়েছে। কিভাবে রক্ত দিতে হয়। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। যাদের রক্তের বিনিময়ে আজ একটি স্বাধীন দেশে কথা বলতে পারছি। তাদের স্যালুট জানাই। এটি ধরে রাখতে হবে। যতদিন ক্ষমতায় থাকে,ততদিন তারা রাজা। আর যখন ক্ষমতায় হারায়,তখন গর্তের ইদুর। এখন কি তারা রাজা হালতে আছেন বলে নেতাকর্মীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন জামায়াতের আমীর।

ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়। এমন রাজনীতিকে ঘৃনা করি। যারা জুলাই-আগষ্টে বুক পতে দিয়েছে। তাদের স্মরণ করে তিনি বলেন, বুকের ভিতর তুমুল ঝড়,বুক পেতেছি গুলি কর। যে যুবকরা বুক পেতে দিয়ে দেশ স্বাধীন করছে। বাংলাদেশকে একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। তাদের হাতে আগামীর বাঙলাদেশ তুলে দিতে হবে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে দেশের মানুষ মুক্তি পায়নি। আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই দেশের মানুষ মুক্তি পেতে চাই। আর জামায়াত ইসলামী মানুষের মুক্তির জন্যেই সেই কাজটি করছে বলে জানান তিনি।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এটিএম মাসুম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন,জামায়াত নেতা কাজী দ্বীন মোহাম্মদ,শাহজাহান চৌধুরী, ঢাকা উত্তরের জামায়াতের সেক্রেটারী ড. রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের সেক্রেটারী জেনারেল এডভোকেট আতিকুর রহমান, ঢাকাস্থ লক্ষ্মীপুর ফোরামের সভাপতি ডা. আনোয়ারুল আযিম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এডভোকেট নজির আহমদ, আর হাফিজ উল্যাহসহ অনেকেই।

সমাবেশে নেতারা বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে।  তা না হলে কোনভাবে জাতীয় নির্বাচন হতে পারেনা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। আগামীতে প্রত্যেকটি আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে এখন থেকে মাঠে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশন দেন নেতারা।
দীর্ঘ ২৮ বছর পর লক্ষ্মীপুরে খোলা মাঠে এই প্রথম বিশাল গনজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকে সভাস্থলে মিছিলে মিছিলে আসতে থাকেন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা। সভা শুরুর আগে সামাদ মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। পরে শহরের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে সমাবেশে আশা নেতাকর্মীরা বড় পদার্য় সমাবেশ উপভোগ করতে দেখা যায়। সমাবেশে প্রায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটছে বলে জানান জামায়াতের নেতারা।


শেয়ার করুন