মুক্তিকন্ঠ

ভয়েস অফ ফ্রিডম ফাইটার ১৯৭১

চন্দ্রগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা খাল অবৈধ দখলে, পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যাহত, জনজীবন বিপন্ন

শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
চন্দ্রগঞ্জ বাজার লক্ষ্মীপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে বেশি সরকারী রাজস্ব আদায়কারী বাজার। কিন্তু এই বাজারে পানি নিষ্কাষনে সরকারের তেমন কোন উদ্যোগ গত ২যুগেও দৃশ্যমান হয় নি, ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই এই বাজারের ব্যবসায়ীরা পানিবন্ধি হয়ে থাকে। পানি নিষ্কাষনের সবচেয়ে উপযোগী হলো মুক্তিযোদ্ধা খাল যা রহমতখালি খালের সাথে সংযুক্ত। কিন্তু মু্িক্তযোদ্ধা খাল অবৈধভাবে কিছু ভূমি দস্যু দখল করে রাখার কারনে খালের পানি প্রবাহিত হতে পারছেনা ফলে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে হালকা বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চন্দ্রগঞ্জ নিউমার্কেট থেকে গরুহাটা এবং গরুহাটা থেকে বাঁধেরগোড়া পর্যস্ত দক্ষিণপাশের পানি যাওয়ার একমাত্র উপায় মুক্তিযোদ্ধা খাল। খালে পানি যাওয়ার জন্য সরকারী ভাবে দক্ষিণ পাশে ৪টি ৫ফুট প্রশস্থ ড্রেন রাখা হলেও ড্রেন দখল ও খাল দখল করে পানি প্রবাহ বিঘ্নিত করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও ভূমি দস্যু।
বর্তমানে দেখা যায়, লোকনাথ জুয়েলার্সের স্বত্তাধিকারী সমীর কর্মকার গরুহাটা সংলগ্ন দক্ষিণপাশে একটি দোকান ক্রয় করে পরে তিনি দোকানে পরে প্রায় ১০০ফুট খাল সিসি ঢালাই করে স্থাপনা তৈরী করে দখল করে ফেলে। এছাড়াও বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও আওয়ামীলীগ নেতা গৌতম চন্দ্র মজুমদার ও লতিফপুরের প্রবাসী হাজী সৈয়দ আহম্মদসহ যৌথভাবে পুরো খাল এপার ওপারের সাথে সংযুক্ত করে দখল করে ফেলে, যার কারনে পানি প্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়াও চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন গং, সমীর দেবনাথ, জিল্লাল, সুমনসহ আরো অনেকে খালের অধিকাংশ অংশ দখল করে আছে, তবে তারা জানায় নথি মূলে(একসনা নথি) দখলে আছে।
চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান, মুক্তিযোদ্ধা খালের উত্তর পাড়ে ৩৫টি নথি বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। লীজের শর্ত ভঙ্গের কারনে এই সব নথি বাতিল করা হয়েছে বলে জানা যায়। কিন্তু গত ৫-৬ বছর আগে এই নথিগুলো বাতিলের জন্য বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি।
চন্দ্রগঞ্জ বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ জানান, ‘আমরা চন্দ্রগঞ্জ বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। আমরা নিয়মিত বাজারের খাজনা পরিশোধ করে আসছি, কিন্তু সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায় যার কারনে আমরা ঠিকমত ব্যবসা করতে পারছি না।’
চন্দ্রগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘নানা রকম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে চন্দ্রগঞ্জ বাজার ব্যবস্থা। এই বাজারের পানি নিষ্কাষন একটি নিত্যদিনের সমস্যা, মুক্তিযোদ্ধা খালের উপর যে অবৈধ স্থাপনা গুলো আছে তা দ্রুত উচ্ছেদ করে বাজারের পানি প্রবাহ ঠিক রাখার জোর দাবী জানাচ্ছি। এছাড়াও বাজারের যানজট সমস্যা একটি নিত্য দিনের সঙ্গী আমাদের। যানজটের কারনে এই বাজারের ব্যবসায়ী ও জনসাধারনের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভি দাস জানান, ‘খাল দখল এবং ৩৫টি নথি বাতিলের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে সত্যতা যাচাই করে খাল পুনরুদ্ধারে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও যে ৩৫টি নথি বাতিল করা হয়েছে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


শেয়ার করুন