মোহাম্মদ ফয়সালঃ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানায় অবৈধভাবে ও অনুমোদনহীনভাবে চলছে হযরত দেওয়ান শাহ মেলা। কোন রকম প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়াই করোনার ঝুঁকি নিয়ে সহস্রাধিক দোকান-পাট নিয়ে এই মেলা শুরু হওয়ায় এবং মেলাকে ঘিরে এলাকার আশে পাশের এলাকায় রমরমা জুয়ার আসর বসায় স্থানীয় জনমনে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জানাযায়, চন্দ্রগঞ্জ থানার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ রাজাপুর গ্রামে অবস্থিত দেওয়ানশাহ (রঃ) মাজার ঘিরে প্রায় ২০০ বছর ধরে প্রশাসনের অনুমতিক্রমে ১লা মাঘ থেকে সপ্তাহ ব্যাপী মেলা চলে আসছে। এ মেলাকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে এ মেলায় এসে থাকে।
এ বছর করোনার কারনে স্থানীয় জনগণ মেলা না করার পক্ষে অবস্থান নিলেও ক্ষমতাসীন দলের একাংশ কোন রকম অনুমোদন ছাড়াই মেলা শুরু করছে। আরো জানা যায়, স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা ও সাধারন মানুষ মেলা না হওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত দরখাস্ত করে।
এ মেলায় কোন বছরই দোকানদার ও আগতদের জন্য কোন পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা থাকে না, যার কারনে আশে পাশের মানুষকে নানা রকম বঞ্চনা সহ্য করতে হয়। আশে পাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে অব্যবস্থাপনার জন্য। মেলায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মেলার আসর। অনেক ধরনের অনৈতিক কাজ হয় এই মেলাকে কেন্দ্র করে, যা শিশু, কিশোর এবং বয়স্ক সবার জন্য হুমকি এবং বিরক্তির কারন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান করোনার জন্য আমরা অর্থনৈতিকভাবে খুবিই ক্ষতিগ্রস্ত, এই মেলার কারনে নিজেদের সন্তানদের কাছে হয়ত অনেক ছোট হতে হবে তাদের বায়না পূরণ করতে। প্রবাসী এই এলাকার অনেক মানুষ জানান তারা বিদেশে বর্তমানে খুবই কষ্টে আছে। এই সময় যদি মেলা হয় তাহলে তারা বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারবেনা তাদের সন্তানদের জন্য।
এবিষয়ে জানতে চাইলে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আমিন জানান, মেলার অনুমতির বিষয়ে আমার জানা নাই। তবে বিভিন্ন জেলা থেকে যারা আগত ব্যবসায়ী তাদের তো আমরা আগে থেকে না করতে পারি না।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন জানান, মেলার কোন অনুমতি হয়েছে বলে আমি জানি না, তবে স্থানীয় মসজিদ এবং মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে মেলা চালানোর জন্য। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোন সিদ্ধান্ত এখনো পাই নি।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেলার অনুমোদনের বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নাই। এটা ডিসি অফিস জানে।
লক্ষ্মীপুর জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, মেলার কোন অনুমোদন দেওয়া হয় নি। বিষয়টি আমি ক্ষতিয়ে দেখছি।
সাধারন মানুষের একান্ত ইচ্ছা কোন ভাবেই বৈশ্বিক করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি রোধে হযরত দেওয়ার শাহ (রঃ) এর মেলাটি যেন এই বছর না হয়।
আরও পড়ুন
লক্ষ্মীপুরে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা
লক্ষ্মীপুরে অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল বাছাই-প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
লক্ষ্মীপুরে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা