April 25, 2024

মুক্তিকন্ঠ

ভয়েস অফ ফ্রিডম ফাইটার ১৯৭১

২বছর ধরে ১৪ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতা গ্রেপ্তার!

অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম মেম্বার

শেয়ার করুন

মুক্তিকন্ঠ ডেস্কঃ

একটা মেয়ের কাছে সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হলো তার পিতা। অথচ রক্ষক যদি ভক্ষক হয়, আর সেই পিতাই যদি হয় মেয়ের সর্বনাশের কারন, তাহলে সেই কলঙ্কিত পিতা থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো। বলছি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন ৯নং উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ইউপি সদস্য ও ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম(রতন) মেম্বারের কথা। তিনিই সেই কুলাঙ্গার পিতা যে গত ২ বছর থেকে মেয়ের অনিচ্ছায় তাকে ধর্ষণ করেছেন।

অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম মেম্বার

গত (২৮ আগষ্ট) অভিযুক্ত মেম্বারের ২য় স্ত্রী ফাতেমা বেগম রাত আনুমানিক ৩ টার দিকে ঘুম থেকে দেখে তার ঔরসজাত ১৪ বছরের মেয়ের সাথে মেয়ের অনিচ্ছায় অনৈতিক কাজে লিপ্ত। সাথে সাথে ২য় স্ত্রী বিষয়টি নিয়ে বাঁধা দিলে লম্পট মেম্বার ২য় স্ত্রীকে অনেক মারধর করে এবং বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বলেন।

পরবর্তীতে ২য় স্ত্রী বিষয়টি মেয়েকে নিয়ে আশেপাশের কয়েকজনকে জানায়। আস্তে আস্তে লোক জানাজানি হলে এবং গত (২৫ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বরাবর একটি দরখাস্ত করা হলে প্রশাসনের টনক নড়ে। পরবর্তীতে গত (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযুক্ত মেম্বার, তার ২য় স্ত্রী ও ভিকটিমকে থানায় নিয়ে আসে।

ঘটনার সত্যতা পেলে ভিকটিম (৩০ সেপ্টেম্বর) লক্ষ্মীপুর জজ কোর্টে ২২ ধারায় জবানবন্ধী প্রদান করে। পরবর্তীতে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযুক্ত মেম্বারকে গ্রেপ্তার দেখায়। 

ভিকটিমের মামা শাহানুর সুলতান প্রঃ সাইফুল ভিকটিমের লম্পট পিতা মোঃ সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে। বিষয়টি চন্দ্রগঞ্জ থানার (ওসি) তদন্ত মোঃ বেলায়েত হোসেন নিশ্চিত করেন।

প্রসঙ্গত বিষয়ে মুক্তিকন্ঠ নামক নিউজ পোর্টালে গতকাল খবরটি প্রকাশ করা হলে, সর্ব মহল বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে। নিউজটি ছিল, 

লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকায় আপন পিতা কর্তৃক ১৪ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন ৯ নং উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন এর ৩ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীরীগের সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম ওরপে রতন মেম্বার (৫০) তার ১ম স্ত্রী বেঁচে থাকালীন সময় হতে তারই ঔরসজাত ১৪ বছরের মেয়েকে লাগাতার ধর্ষণ করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

অভিযোগ পাওয়া যায় তার ১ম স্ত্রী জোলেখা বেগম (৪০) বেঁচে থাকাকালীন ধর্ষণের ঘটনা তার স্ত্রীর হাতে ধরা পড়ার পর থেকে সংসারে কলহ লেগেই থাকতো। এ বিষয় নিয়ে তার স্ত্রী প্রতিবাদ করলে তাকে অমানুষিক নির্যাতন এবং প্রচন্ড মারধর করা হতো। শেষ দিকে তার স্ত্রী আর সহ্য করতে না পেরে গত বছর আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেন। 

অভিযুক্ত মেম্বারের স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে রতন মেম্বার তার মেয়েকে নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছেন বলে ভিকটিমের একটি অডিও বার্তা থেকে জানা যায়। এ বিষয় কাউকে জানালে তাকে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেয়। লোকলজ্জা ও রতন মেম্বারের ভয়ে এতো দিন কারো কাছে সে ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ করতে সাহস পায়নি। বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বাবার নামে মামলা করার জন্য গেলেও কেউ তাকে সাহায্য করেনি বরং উল্টা তার বাবার কাছে মামলার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে মেয়েটি বাবার কাছে ধর্ষিত হয়ে অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় ভাবে জানা যায়।

সর্বশেষ তার দ্বিতীয় স্ত্রী ফাতেমার কাছে ধরা পড়ার পরেও একাধিকবার ধর্ষণ করে। অতপর মেয়ে আর সহ্য করতে না পেরে এই নেক্কার জনক ঘটনা এলাকাবাসী ও আশেপাশের মানুষের কাছে প্রকাশ করতে থাকে। এলাকাবাসী জানার পর বিষয়টি স্থানীয় খোকন নামের জৈনক ব্যক্তি লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বরাবর একটি চিঠি পাঠান ভূক্তভোগী মেয়েটি ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য। একই চিঠির অনুলিপি লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাসহ অন্যান্য প্রশাসনিক দপ্তরে প্রেরণ করা হয়।

এ ঘটনা প্রকাশ হলে রতন মেম্বার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মেয়েকে ও তার ২য় স্ত্রীকে ১ সপ্তাহ যাবত এলাকা থেকে অনত্র সরিয়ে রেখেছেন। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী জানায় এর আগেও একাধিকবার নারীসহ রতন মেম্বার ধরা পড়েন এবং এলাকায় জনপ্রতিনিধি হয়েও প্রভাবশালীদের প্রভাব খাটিয়ে মদ জুয়ার আসর বসানোসহ নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। তাই এ ঘটনায় লম্পট বাবার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন এবং একই সাথে মা হারা অসহায় মেয়ের নিরাপত্তা চায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা।

অভিযুক্ত মেম্বার তার উপর আনীত অভিযোগটি অস্বীকার করেন এবং তার বিরোধীরা তার বিরুেদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন বলে জানায়। অভিযুক্ত মোঃ সিরাজুল ইসলাম মেম্বার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের  রাজারামঘোষ গ্রামের ধনগাজী মিয়াজী বাড়ির মৃত নুরুজ্জামানের ছেলে।

গতকাল (২৯ সেপ্টেম্বর) বুধবার রাতে অভিযুক্ত মোঃ সিরাজুল ইসলাম মেম্বারকে আটক করে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ। চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একে ফজলুল হক জানান ঘটনা জানার পরই অভিযুক্ত মেম্বারকে ও তার মেয়েকে ২য় স্ত্রীসহ থানায় আনা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।


শেয়ার করুন

আরও পড়তে পারেন..