মুক্তিকন্ঠ

ভয়েস অফ ফ্রিডম ফাইটার ১৯৭১

চন্দ্রগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন সংবাদে জনমনে ক্ষোভ

চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন

শেয়ার করুন

মুক্তিকন্ঠ ডেস্কঃ

চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করায় জনমনে ক্ষোভ ও মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

গত রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় দৈনিক নতুনচাঁদ নামক পত্রিকায় সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন ১০নং চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ২বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে অবান্তর ও ভিত্তিহীন একটি সংবাদ প্রকাশ করে যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।

প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে এই প্রতিবেদক সরেজমিনে তদন্ত করে। সরেজমিনে প্রকাশিত সংবাদের সাথে কোন মিল পাওয়া যায় নি। 

প্রথমত চেয়ারম্যানের মেয়ের জামাই নিয়ে কথা সংবাদে প্রকাশ করা হয় হয়েছে তার কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় নি। কারন চেয়ারম্যান এই পর্যন্ত যত গুলো কাজ করেছে বেশির ভাগই চেয়ারম্যানের পক্ষে তার মেয়ের জামাই মানিক তদারকি করেছে। চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায় চেয়ারম্যান সম্পর্কে সাধারন মানুষের ধারনা খুবই উচ্চমানের। পাঁচপাড়া গ্রামের মোঃ ইউসুফ জানান ‘আগের চেয়ারম্যানদের আমরা অফিসে তেমন পেতাম না, আর বর্তমান চেয়ারম্যান সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিষেদে বসে থাকে শুধু স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য। আর চেয়ারম্যানের অফিসে গেলে চা না খেয়ে কখনো আসতে পানি না। কোন কাজে চেয়ারম্যান টাকা চেয়েছে বলে আমরা কখনো দেখি নাই।’

আরেকটি বিষয়, প্রকাশিত সংবাদের যিনি লেখক তিনি হয়তো জানে না ইউনিয়ন পরিষদে যে সিসি ঢালাইয়ের বরাদ্দগুলো আসে তাতে কোন রডের পরিকল্পনা নাই সরকারীভাবে। এখন এখানে কেউ বাঁশ বা কাঠ দিয়ে যদি ঢালাই করে তাহলে এটা চেয়ারম্যানের বিষয় না। এ বিষয়ে দেওপাড়া গ্রামের মো. হানিফ জানান, আমাদের সমতা হল থেকে জালাল দর্জি বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার সিসি ঢালাইতে সরকারীভাবে কোন রডের পরিকল্পনা ছিল না, কিন্তু আমরা এলাকার লোকজন স্থানীয়ভাবে রড সংগ্রহ করে আমাদের রাস্তাটি আমরা মজবুতভাবে করাই।’ এখানে সমতা হল থেকে জালাল দর্জি বাড়ির রাস্তায় রড দিল না বাঁশ দিল এটা চেয়ারম্যানের বিষয় না, চেয়ারম্যানের বিষয় হলো সিসি ঢালাই।

তারপর গত (২৯ নভেম্বর ২০২২) চন্দ্রগঞ্জ মাছ বাজার শেডের কাজের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ। প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবেদক যে নাটক সাজাতে চেয়েছেন, আপনার মঞ্চায়নে ভুল আছে, কারন এটা আপনিও ভালো জানেন এবং উপজেলা কর্মকর্তাও ভালো জানেন ঘটনার অন্তর্নিহিতভাব কি? চেয়ারম্যান মাছ বাজার শেডের কাজ হাতে নিয়েছে মাত্র ১সপ্তাহ, আর যুগিহাটা শেডের কাজতো এখনো আরম্ভই হয়নি, সেখানে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহারের অভিযোগ তো ভিত্তিহীন। আর এই দুই কাজের বরাদ্দ ৮০লক্ষ টাকা এটা চেয়ারম্যানই এখনো জানে না। চেয়ারম্যান শুধু ১০লক্ষ টাকার একটি চেক পেয়েছিল, যা উপজেলা কর্মকর্তার নির্দেশে ঠিকাদারকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে যেকোন কারনে মাছ বাজার শেডের কাজ যখন চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয় তখন তখন ঠিকাদার তার আংশিক কাজের খরচ রেখে বাকি টাকা চেয়ারম্যানকে দেয়।

অতিরিক্ত অর্থ আদায় বিষয়ে যা বলা হয়েছে, চেয়ারম্যানের তো নগদ অর্থ ধরার কোন সুুযোগই নাই। ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স এর বিষয়ে যা বলা হয়েছে হোল্ডিং ট্যাক্স সরকার নির্ধারিত থেকে কম নেওয়া হয় যার প্রমাণ হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের রশিদ। আর ট্রেড লাইসেন্স তো বিগত প্রয়াত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল থাকতেই ৫৭৫টাকা করা হয়েছে, এখানে চেয়ারম্যানে দায় কি?

চন্দ্রগঞ্জ বাজারের দীর্ঘদিনের একটি সমস্যা ছিল, যা হল  পোষ্ট অফিস থেকে ১নং পোল পর্যন্ত রাস্তার দুর্ভোগ। গত ২/৩ চেয়ারম্যান গেলেও চন্দ্রগঞ্জের প্রাণ কেন্দ্রের এই রাস্তার কোন উন্নয়ন কোন চেয়ারম্যান করেনি। বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল আমিন সকল ইউপি সদস্যদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে এই রাস্তার কাজটি করান। বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়, এই রাস্তা করতে আংশিক অংশে রড ব্যবহার করা হয়, চেয়ারম্যান নিজের পকেট থেকে অনেক টাকা রড বাবদ খরচ করেছে। আর প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবেদক মনে হয় জানে না, সরকারী কাজের বরাদ্দের কত পার্সেন্ট চেয়ারম্যানের হাতে আসে?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন পরিষদের সামনের এক ব্যবসায়ী জানান, আমরা বর্তমান চেয়ারম্যানকে কখনই সন্ধ্যার পরে অফিসে থাকতে দেখি নাই প্রয়োজন ছাড়া। আর জামাত-বিএনপি কে শেল্টার দেওয়ার কথা বলছেন? প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবেদক একটু চোখ খুললেই দেখবেন কোন কমিটি জামাত-বিএনপি সমন্বয়ে চন্দ্রগঞ্জ বাজার দখলের পায়তারা করছে? আর যে বিতর্কিত লোকের কথা বলা হয়েছে, তার ভাই একজন প্রবাসী ছিল দীর্ঘদিন, আর বর্তমানে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। এখন প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবেদক যদি একজন পদ-পদবীধারী আওয়ামীলীগ নেতাকে বিতর্কিত করে তাহলে তো বর্তমান সরকারকেই বিতর্কিত করল!

সর্বশেষ চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৯টা ওয়ার্ড সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, লতিফপুর গ্রামের ব্যবসায়ী কায়েস ও দুলাল জানান, ‘নুরুল আমিন চেয়ারম্যান একজন অত্যন্ত ভালো মানুষ, তার ‍বিরুদ্ধে অপপ্রচার এই ইউনিয়নের সাধারন জনগণ মেনে নিবে না। আমানী লক্ষ্মীপুর গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান জানান, বিগত চেয়ারম্যানদের মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান অন্যতম, আমরা কোন কাজে পরিষদে গেলে আপ্যায়ন তো করেই অনেক কাজে সরকারী ফি লাগলেও রাখে না, নিজে থেকে দিয়ে দেয়। তিনি আরো জানান স্বাধীনতার পর থেকে নুরুল আমিনের মত চেয়ারম্যান আমি পাইনি। দেওপাড়া গ্রামের আব্দুর জাহের জানান, ‘আমরা সাধারন মানুষ আগে চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনে তেমন খুজে পেতাম না, আর বর্তমান চেয়ারম্যান সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পরিষদে থাকে আমাদের সেবা করার জন্য। তিনি কোন কাজে কারো নিকট থেকে অনৈতিক সুবিধা নেয় মর্মে আমরা কখনো শুনি নাই বা আমরা দেখিও নাই।

চন্দ্রগঞ্জ বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম. ছাবির আহম্মেদ এর বক্তব্যের ব্যাপারে চেয়ারম্যান জানান, ‘তিনি এই এলাকার একজন ব্যবাসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা, এই ইউনিয়নে তার ৩টি বহুতল স্থাপনা আছে, গ্রাম পুলিশের তথ্যমতে উনার হোল্ডিং ট্যাক্স বাকি আছে প্রায় ১৬,৬০০/- টাকা। গত কিছু দিন আগে তিনি ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য পাঠালে আমি বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্সের জন্য উনার ট্রেড লাইসেন্স বকেয়া হোল্ডিং পরিশোধের পর নেওয়ার জন্য বলি। এতে তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি ধমকি দেন ও জেলা প্রশাসকের কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন, প্রয়োজনে মামলা করবেন বলেও হুমকি ধমকি দেন।’ পাঠক অবশ্যই বুঝবেন এম. ছাবির আহম্মেদ এর এই ধরনের বক্তব্যের কার কি? 

প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, ‘দৈনিক নতুনচাঁদ পত্রিকায় যে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি চেষ্টা করি বিধি মোতাবেক সকল কাজ করতে। এরপর কেউ যদি আমার থেকে অনৈতিক সুবিধা না পায় এবং পরে যদি আমার ব্যাপারে কুৎসা রটায় এখানে আমার দায় কি? আমি প্রকাশিত মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদের ব্যাপারে শীঘ্রই আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’এছাড়াও তিনি কোন ধরনে গুজবে বিভ্রান্ত হওয়া থেকে বিরত থাকতে ইউনিয়ন এলাকার সকলকে অনুরোধ করেন।


শেয়ার করুন